মোঘল স্থাপত্যের এক অনুপম স্থাপত্য নিদর্শন রুনী বিবিরি মাজার। বর্তমানে সেটির নাম দরগাহ বাজার । এ মাজারটি নিয়ে নানা কিংবদন্তী রয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের লৌকিক বিশ্বাস এটি একটি মসজিদ যা জীন পরী মিলে কোন এক রাতের মধ্যে নির্মাণ করতে চেয়েছিল, হঠাৎ করে তা পাশের বাড়ীরি এক মহিলা দেখে ফেলে। জীন পরীরা ঐ মহিলাকে বাড়ীল অন্যান্য লোককে তা জানাতে নিষেধ করে। জানালে সে মহিলা মারে যাবে বল তারা তাকে ভয় ভীতি দেখায়। ঐ মহিলা তা শুনে বাড়ীর সকলকে বলে দেয়, তৎক্ষণাত বাড়ীর লোকজন বাতি নিয়ে দেখতে আসলে আসলে জীন পরীরা অর্ধেক কাজ সমাপ্ত করে চলেযায়। এবং ঐ মহিলাটিও সেই রাতেই মারা যায়। বর্তমানে মাজারটি অর্ধনির্মিত জরাজীর্ণ অবস্থায় এক বিশাল বটবৃক্ষ বেষ্টিত অবস্থায় রয়েছে। যাতে আছে সরু পাটার মাত ইট, যা খুবই কারুকার্যপূর্ণ। ফটক দ্বারে বড় বড় পাথর। এর যে শিল্পিত রুপ তা চোখে না দেখলে অনুমান করা দূরুহ। এ অঞ্চলের লৌকিক বিশ্বাস এমনটি হলেও বাস্তবে তার নির্মাণ ইতিহাস অন্য রকম। মোঘল পরিবারের এক রমণী যার নাম রুনী বেগম।তার একটি পুত্র সন্তান ছিল। তৎকালীন সময়ে জলদস্যুদের ছিল খুব উপদ্রব। জলদস্যুরা রুণী বেগমের একমাত্র পুত্রকে মুক্তিপণের আশায় নৌপথে আরাকানে (বর্তমান চট্টগ্রাম) বন্দী করে নিয়ে যায়। রুণী বেগম পাগল পাড়া হয়ে পুত্রকে মুক্তির আশায় চার বেয়ারার পালকি নিয়ে মোঘল রাজার দরবার থেকে সোজা পথে আরাকানের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ যাত্রায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমান দরগার বাজার স্থানে যে মাজারটি অবস্থিত রুণী বেগম সে স্থানে েএসে কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর মৃত্যু বরণ করেন। বর্তমান বাজার স্থানে তার সমাধি। তৎকালীন মোঘল সম্রাটের নিকট এ সংবাদ পৌঁছালে তিনি সেখান থেকে কাঠ মিস্ত্রি সহ পাইক পেয়াদা প্রেরণ করে ফরমান জারী করেন যে, রুনী বেগমের মাজার এলাকার নাম রুণী বেগমের নাম অনুসারে রুণী গাঁও হবে। তখন থেকে সে গ্রামের নাম রুনী গাঁও। আরো জনশ্রুতি আছে যে, শের শাহের আমলে দিল্লী হতে আরকান পর্যন্ত যাতায়াতের পথ ধরে তৎকালীন একমাত্র বাহন একটি ঘোড়ার এক দিনের অতিক্রম দুরত্বে একটি করে সরাই খানা নির্মাণ করা হয়েছিল । এ মাজার স্থলে ছিল তারই একটি সরাই খানা। এখানে তৎকালীন মোঘল পরিবারে রুণী বেগম নামে এক মহিলা অবস্থান করেন এবং অসুস্থ হয়ে সেখানেই মারা যান। সে থেকেই এ গ্রামের নাম রুণী গাঁও এবং রুণী বেগমের মাজারই বর্তমান গাজীর দরগাহ মাজার। মোঘল দের পতনের পর এটি সংরক্ষণের বিষয়ে কেউ পদক্ষেপ নেয় নি। প্রতি বছর ১০ মহরম মাজার প্রাঙ্গনে মেলা, জারী গান, বাউল সঙ্গীত ও উরশ হয়ে থাকে। এলাকাবাসী প্রতি বছরে এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করে।
অবস্থান:
নকলা উপজেলা
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস